Header Ads

 আস্সালামু আলাইকু,ওয়া রাহমাতুল্লা। প্রিয় বন্ধু "মাসিক আল-আকসা" পত্রিকাটি ভিজিট করার জন্য আপনাকে জানাই অসংখ্য ধন্যবাদ। নিয়মিত ভিজিট করুন, মাসিক আল-আকসার সাথে থাকুন। ধন্যবাদ

Breaking News

জুমআর দিনের ফযিলত ও আমল।

জুমআর দিনের ফযিলত ও আমল।

লেখকঃ আজিজুল হাকিম


বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।


یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اِذَا نُوۡدِیَ لِلصَّلٰوۃِ مِنۡ یَّوۡمِ الۡجُمُعَۃِ
فَاسۡعَوۡا اِلٰی ذِکۡرِ اللّٰہِ وَذَرُوا الۡبَیۡعَ ؕ ذٰلِکُمۡ خَیۡرٌ لَّکُمۡ اِنۡ کُنۡتُمۡ تَعۡلَمُوۡنَ

হে মুমিনগণ! জুম'আর দিন যখন নামাযের জন্য ডাকা হয়, তখন আল্লাহর যিকিরের দিকে ধাবিত হও এবং বেচাকেনা ছেড়ে দাও। এটাই তােমাদের জন্য শ্রেয়- যদি তােমরা উপলব্ধি কর।

আল জুমুআহ - ৯


সপ্তাহের শ্রেষ্ঠ দিন হচ্ছে, শুক্রবার দিন। এই দিনটি অন্যান্য দিনের চেয়ে পবিত্র।

হাদীসে এসেছে,

আবূ হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যার উপর সূর্য উদিত হয়েছে তার মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ দিন হল জুমার দিন। এই দিনে আদমকে সৃষ্টি করা হয়েছে, এই দিনে তাঁকে জান্নাতে স্থান দেওয়া হয়েছে এবং এই দিনেই তাঁকে জান্নাত থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে।”

মুসলিম ৮৫৪, তিরমিযী ৪৮৮, ৪৯১, নাসায়ী ১৩৭৩, ১৪৩০, আহমাদ ৭৬৩০, ৮১৪১, ৯৯৩০, ১০১৬৭, ১০২৬৭, ১০৫৮৭, ২৭৬০৮, ২৭২৩৪

জুমআর দিনে গোসল করাঃ

জুমআর দিনে গোসল করা মুস্তাহাব। কোন কোন হাদীস থেকে জানা যায় জুমআর দিনে গোসল করা ওয়াজিব। প্রকৃত বিষয় হচ্ছে, জুমআর দিনে গোসল করা মুস্তাহাব।

ইবনে উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “তোমাদের কেউ যখন জুমাতে আসার ইচ্ছা করবে, তখন সে যেন গোসল করে।”

সহীহুল বুখারী ৯১৯, ৮৭৭, ৮৯৪, তিরমিযী ৪৯৩, নাসায়ী ১৩৭৬, ১৪০৫, ১৪০৭, ইবনু মাজাহ ১০৮৮, আহমাদ ৩০৫০, ৪৪৫২, ৪৫৩৯, ৪৯০১, ৪৯২৩, ৪৯৮৫, ৪৯৮৮, মুওয়াত্তা মালিক ২৩১, দারেমী ১৫৩৬

আবু সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “প্রত্যেক সাবালকের উপর জুমার দিনের গোসল ওয়াজিব।”

জুমআর দিনে গোসল করা ওয়াজিব নয় তার দলীল,

সামুরাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যে ব্যক্তি জুমার দিনে ওযু করল তাহলে তা যথেষ্ট ও উত্তম। আর যে গোসল করল, (তার) গোসল হল সর্বোত্তম।”

তিরমিযী ৪৯৭, আবূ দাউদ ৩৫৪, নাসায়ী ১৩৮০, আহমাদ ১৯৫৮৫, ১৯৬১২, ১৯৬৬১, ১৯৬৬৪, ১৯৭৪৬

জুমআর দিনে সুগন্ধি ব্যবহার করাঃ

সালমান রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যে কোন ব্যক্তি জুমার দিন গোসল ও সাধ্যমত পবিত্রতা অর্জন করে, নিজসব তেল গায়ে লাগায় অথবা নিজ ঘরের সুগন্ধি (আতর) ব্যবহার করে, অতঃপর (মসজিদে) গিয়ে দু’জনের মধ্যে পার্থক্য সৃষ্টি না করেই (যেখানে স্থান পায়, বসে যায়) এবং তার ভাগ্যে যত রাকআত নামায জোটে, আদায় করে। তারপর ইমাম খুতবা আরম্ভ করলে নীরব থাকে, সে ব্যক্তির সংশ্লিষ্ট জুম‘আ থেকে পরবর্তী জুম‘আ পর্যন্ত কৃত সমুদয় (ছগীরা) গুনাহ-রাশিকে মাফ করে দেওয়া হয়।”

সহীহুল বুখারী ৮৮৩, ৯১০, নাসায়ী ১৪০৩, আহমাদ ২৩১৯৮, ২৩২০৬, ২৩২১৩, দারেমী ১৫৪১

সকাল সকাল মসজিদে যাওয়াঃ

আবূ হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যে ব্যক্তি জুমার দিন নাপাকির গোসলের ন্যায় গোসল করল এবং (সূর্য ঢলার সঙ্গে সঙ্গে) প্রথম অক্তে মসজিদে এল, সে যেন একটি উঁট দান করল। যে ব্যক্তি দ্বিতীয় সময়ে এলো, সে যেন একটি গাভী দান করল। যে ব্যক্তি তৃতীয় সময়ে এলো, সে যেন একটি শিংবিশিষ্ট দুম্বা দান করল। যে ব্যক্তি চতুর্থ সময়ে এলো, সে যেন একটি মুরগী দান করল। আর যে ব্যক্তি পঞ্চম সময়ে এলো, সে যেন একটি ডিম দান করল। তারপর ইমাম যখন খুতবা প্রদানের জন্য বের হন, তখন (লেখক) ফেরেশতাগণ যিকির শোনার জন্য হাজির হয়ে যান।”

সহীহুল বুখারী ৮৮১, ৯২৯, ৩২১১, মুসলিম ৮৫০, ১৮৬০, তিরমিযী ৪৯৯, নাসায়ী ৮৬৪, ১৩৭৫-১৩৮৮, আবূ দাউদ ৩৫১, ইবনু মাজাহ ১০৯২, আহমাদ ৭২১৭, ৭৪৬৭, ৭৫২৮, ৭৬৩০, ৭৭০৮, ৯৫৮২, ৯৬১০, ১০১৯০, মুওয়াত্তা মালিক ২২৭, দারেমী ১৫৪৩

মনোযোগসহকারে খুৎবা শ্রবণ করাঃ

উক্ত রাবী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যে ব্যক্তি উত্তমরূপে ওযু সম্পাদন করে জুমার নামায পড়তে আসবে এবং নীরবে মনোযোগ-সহকারে (খুতবা) শুনবে, তার সেই জুমআ হতে পরবর্তী জুমার মধ্যবর্তী সময় তথা আরও তিন দিনের (ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র) পাপসমূহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে। আর যে ব্যক্তি কাঁকর স্পর্শ করবে, সে বাজে কাজ করবে।”

মুসলিম ৮৫৭, তিরমিযী ৪৯৮, আবূ দাউদ ১০৫০, ইবনু মাজাহ ১০৯০, আহমাদ ৯২০০

জুমআর দিনে বেশী বেশী দুআ করাঃ

উক্ত রাবী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতেই বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদা জুমার দিন সম্বন্ধে আলোচনা করে বললেন, “ওতে এমন একটি মুহূর্ত আছে, কোন মুসলিম ব্যক্তি যদি ঐ মুহূর্তে দাঁড়িয়ে নামায অবস্থায় আল্লাহর কাছে কিছু প্রার্থনা করে, তাহলে আল্লাহ তাকে তা দান করে থাকেন।” এ কথা বলে তিনি স্বীয় হাত দ্বারা ইঙ্গিত করলেন, সে মুহূর্তটি খুবই সংক্ষিপ্ত।

সহীহুল বুখারী ৯৩৫, ৫২৯৫, ৬৪০০, মুসলিম ৮৫২, তিরমিযী ৪৯১, নাসায়ী ১৪৩০-১৪৩২, আবূ দাউদ ১০৪৬, ইবনু মাজাহ ১১৩৭, আহমাদ ৭১১১, ৭৪২৩, ৭৬৩১, ৭৭১১, ৭৭৬৪, ৮৯৫৩, ৮৯৮৬, ৯৮৭৪, ৯৯২৯, ৯৯৭০, ১১২৩০, মুওয়াত্তা মালিক ২২২, ২৪২, দারেমী ১৫৬৯

জুমআর দিন বেশী বেশী দরুদ পাঠ করাঃ

আওস ইবনে আওস রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “তোমাদের দিনগুলির মধ্যে সর্বোত্তম একটি দিন হচ্ছে জুমার দিন। সুতরাং ঐ দিনে তোমরা আমার উপর বেশী বেশী দরূদ পাঠ কর। কেননা, তোমাদের পাঠ করা দরূদ আমার কাছে পেশ করা হয়।”

আবূ দাউদ ১০৪৭, ১৫৩১, নাসায়ী ১৩৭৪, ইবনু মাজাহ ১৬৩৬, আহমাদ ১৫৭২৯, দারেমী ১৫৭২

জুমআর দিন দুআ কবুলের সময়ঃ

আবূ বুর্দাহ ইবনে আবূ মুসা আশআরী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা আব্দুল্লাহ ইবনে উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, ‘আপনি কি জুমার দিনের বিশেষ মুহূর্ত সম্পর্কে আপনার পিতাকে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণনা করতে শুনেছেন?’ তিনি বলেন, আমি বললাম, ‘হ্যাঁ। আমি তাঁকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন, আমি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে এ কথা বলতে শুনেছি যে, “সেই মুহূর্তটুকু ইমামের মেম্বারে বসা থেকে নিয়ে নামায শেষ হওয়া পর্যন্ত সময়ের ভিতরে।”

মুসলিম ৮৫৩, আবূ দাউদ ১০৪৯

জুমআর দিনের ফযিলতঃ

উক্ত রাবী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে আরও বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “পাঁচ অক্ত নামায, এক জুমআ হতে পরের জুমআ পর্যন্ত, এক রমজান হতে অন্য রমযান পর্যন্ত (কৃত নামায-রোযা) সেগুলির মধ্যবর্তী সময়ে সংঘটিত (ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র) পাপ-রাশির প্রায়শ্চিত্ত (মোচন-কারী) হয় (এই শর্তে যে,) যখন মহাপাপ থেকে বিরত থাকা যাবে।”

মুসলিম ২৩৩, তিরমিযী ২৪১, ইবনু মাজাহ ১০৭৬, আহমাদ ৭০৮৯, ৮৪৯৮, ৮৯৪৪, ৯০৯২, ১০১৯৮, ২৭২৯০

জুমআর দিনে মসজিদে উপস্থিত না হওয়ার শাস্তিঃ

আবূ হুরাইরা ও আব্দুল্লাহ ইবনে উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তাঁরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে তাঁর কাঠের মিম্বারের উপর দাঁড়ানো অবস্থায় এ কথা বলতে শুনেছেন যে, “লোকেরা যেন জুমআ ত্যাগ করা থেকে অবশ্যই বিরত থাকে; নচেৎ আল্লাহ অবশ্যই তাদের অন্তরে মোহর লাগিয়ে দেবেন, তারপর তারা অবশ্যই উদাসীনদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে পড়বে।”

মুসলিম ৮৬৫, নাসায়ী ১৩৭০, ইবনু মাজাহ ৭৯৪, ১১২৭, আহমাদ ২১৩৩, ২২৯০, ৩০৮৯, ৫৫৩৫, দারেমী ১৫৭০

জুমআর নামায শেষ হলে আল্লাহ তাআলাকে বেশী বেশী স্মরণ করাঃ

فَاِذَا قُضِیَتِ الصَّلٰوۃُ فَانۡتَشِرُوۡا فِی الۡاَرۡضِ وَابۡتَغُوۡا مِنۡ فَضۡلِ اللّٰہِ وَاذۡکُرُوا اللّٰہَ کَثِیۡرًا لَّعَلَّکُمۡ تُفۡلِحُوۡنَ

অতঃপর নামায সমাপ্ত হলে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড় এবং আল্লাহর অনুগ্রহ তালাশ কর ও আল্লাহকে অধিক স্মরণ কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও।

আল জুমুআহ - ১০

No comments