Header Ads

 আস্সালামু আলাইকু,ওয়া রাহমাতুল্লা। প্রিয় বন্ধু "মাসিক আল-আকসা" পত্রিকাটি ভিজিট করার জন্য আপনাকে জানাই অসংখ্য ধন্যবাদ। নিয়মিত ভিজিট করুন, মাসিক আল-আকসার সাথে থাকুন। ধন্যবাদ

Breaking News

মাহে রমজানের ডাক

মাহে রমজানের ডাক।

লেখকঃ আজিজুল হাকিম 


বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا کُتِبَ عَلَیۡکُمُ الصِّیَامُ کَمَا کُتِبَ عَلَی الَّذِیۡنَ مِنۡ قَبۡلِکُمۡ لَعَلَّکُمۡ تَتَّقُوۡنَ ۙ

(আল বাকারা-১৮৩)
হে ঈমানদারগণ! তোমাদের উপর রোজা ফরয করা হয়েছে, যেরূপ ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের উপর, যেন তোমরা পরহেযগারী অর্জন করতে পারো।


মহান আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে পবিত্র রমজানুল মোবারক মাস দান করেছেন আমাদের কল্যানের জন্য। উক্ত আয়াতে কারীমা থেকে আমরা জানতে পারি,

১। কেবলমাত্র ঈমানদারগণের জন্যই মহান আল্লাহ তাআলা রোযার বিধান ফরয করেছেন। তাই প্রত্যেক ঈমানের দাবিদারদের প্রতিই রোযা রাখা ঈমানের দাবী। যারা রমজান মাস লাভ করার পরেও রোযা রাখেনা তারা ঈমানের দাবীতে দূর্বল।

২। রমজানের রোযা রাখাকে মহান আল্লাহ তাআলা ফরয করে দিয়েছেন। ইসলামের মধ্যে কিছু কিছু বিধান রয়েছে যা, ফরয, ওয়াজিব, সূন্নাত নফল এবং মুস্তাহাব। ফরয এমন এক বিধান যা সম্পর্কে কোন অজুহাত চলে না। বিনা বাক্যব্যয়ে তা আমল করতে হয়। অবশ্য শরীয়তের দৃষ্টিতে যদি সেই ব্যক্তি প্রকৃত মাযুর বা অপারগ হয় তাহলে তার জন্য রয়েছে অন্য বিধান।

৩। মহান আল্লাহ তাআলা রোযার এই বিধান শুধু আমাদের উপর নয় বরং পূর্ববর্তী নবীগণের উম্মতের উপরেও ফরয করেছিলেন।

৪। রোযার মাধ্যমে তাকওয়া অর্জন করা যায়। তাকওয়া হচ্ছে, খোদাভীতি। রোযা রেখে কোন ব্যক্তি মিথ্যা কথা বলতে পারে না, সুদ খেতে পারে না, ঘুষ খেতে পারে না, অশ্লীল কাজ করতে পারে না, ওয়াদা খেলাফ করতে পারে না, বেপর্দা চলা ফেরা করতে পারে না ইত্যাদি। এই কাজগুলোই হচ্ছে খোদাভীতির কাজ। রমজান মাসে এগুলো বেশী পরিমাণ করতে করতে একসময় অভ্যাসে পরিণত হয়ে যায়। আর এর মাধ্যমেই পরহেযগারী অর্জন হয়।

এই তাকওয়া যারা অর্জন করতে পারে তারাই হচ্ছে, মুত্তাকী। পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ তাআলা অসংখ্য যায়গায় মুত্তাকীদের আলোচনা করেছেন। নিম্নে তন্মধ্যে কিছু উল্লেখ করা হলোঃ

মুত্তাকীদের ফযিলতঃ

یٰۤاَیُّہَا النَّاسُ اعۡبُدُوۡا رَبَّکُمُ الَّذِیۡ خَلَقَکُمۡ وَالَّذِیۡنَ مِنۡ قَبۡلِکُمۡ لَعَلَّکُمۡ تَتَّقُوۡنَ ۙ

(আল বাকারা-২১)
হে মানব সমাজ! তোমরা তোমাদের পালনকর্তার এবাদত কর, যিনি তোমাদিগকে এবং তোমাদের পূর্ববর্তীদিগকে সৃষ্টি করেছেন। তাতে আশা করা যায়, তোমরা পরহেযগারী অর্জন করতে পারবে।

وَلَوۡ اَنَّہُمۡ اٰمَنُوۡا وَاتَّقَوۡا لَمَثُوۡبَۃٌ مِّنۡ عِنۡدِ اللّٰہِ خَیۡرٌ ؕ  لَوۡ کَانُوۡا یَعۡلَمُوۡنَ

(আল বাকারা-১০৩)
যদি তারা ঈমান আনত এবং খোদাভীরু হত, তবে আল্লাহর কাছ থেকে উত্তম প্রতিদান পেত। যদি তারা জানত।

بَلٰی مَنۡ اَوۡفٰی بِعَہۡدِہٖ وَاتَّقٰی فَاِنَّ اللّٰہَ یُحِبُّ الۡمُتَّقِیۡنَ

(আল ইমরান-৭৬)
যে লোক নিজ প্রতিজ্ঞা পূর্ন করবে এং পরহেজগার হবে, অবশ্যই আল্লাহ পরহেজগারদেরকে ভালবাসেন।

وَسَارِعُوۡۤا اِلٰی مَغۡفِرَۃٍ مِّنۡ رَّبِّکُمۡ وَجَنَّۃٍ عَرۡضُہَا السَّمٰوٰتُ وَالۡاَرۡضُ ۙ  اُعِدَّتۡ لِلۡمُتَّقِیۡنَ ۙ

(আল ইমরান-১৩৩)
তোমরা তোমাদের পালনকর্তার ক্ষমা এবং জান্নাতের দিকে ছুটে যাও যার সীমানা হচ্ছে আসমান ও যমীন, যা তৈরী করা হয়েছে পরহেযগারদের জন্য।

পবিত্র হাদীসে রোযা সম্পর্কে আলোচনাঃ

★ আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন রমাযান আসে তখন জান্নাতের দরজাসমূহ উন্মুক্ত করে দেয়া হয়।

মুসলিম ১৩/১, হাঃ ১০৭৯, আহমাদ ৮৬৯২, বুখারী ইঃ ফাঃ ১৭৭৪

★ আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলতেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ রমাযান আসলে আসমানের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয় এবং জাহান্নামের দরজাসমূহ বন্ধ করে দেয়া হয় আর শয়তানগুলোকে শিকলবন্দী করে দেয়া হয়।

বুখারী ইঃ ফাঃ ১৭৭৫

★ আর যে ব্যক্তি ঈমানসহ সওয়াবের আশায় রমাযানে সিয়াম পালন করবে, তার অতীতের সমস্ত গোনাহ মাফ করা হবে।  

বুখারী ইঃ ফাঃ ১৭৭৭

★ আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সিয়াম ঢাল স্বরূপ। সুতরাং অশ্লীলতা করবে না এবং মূর্খের মত কাজ করবে না। যদি কেউ তার সাথে ঝগড়া করতে চায়, তাকে গালি দেয়, তবে সে যেন দুই বার বলে, আমি সওম পালন করছি। ঐ সত্তার শপথ, যাঁর হাতে আমার প্রাণ, অবশ্যই সওম পালনকারীর মুখের গন্ধ আল্লাহর নিকট মিসকের সুগন্ধির চাইতেও উৎকৃষ্ট, সে আমার জন্য আহার, পান ও কামাচার পরিত্যাগ করে। সিয়াম আমারই জন্য। তাই এর পুরস্কার আমি নিজেই দান করব। আর প্রত্যেক নেক কাজের বিনিময় দশ গুণ।

মুসলিম ১৩/২৯, হাঃ ১১৫১, আহমাদ ৭৩০৮, ইঃ ফাঃ১৭৭০)

★ সাহল (রাঃ) হতে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ জান্নাতে রাইয়্যান নামক একটি দরজা আছে। এ দরজা দিয়ে কিয়ামতের দিন সওম পালনকারীরাই প্রবেশ করবে। তাদের ব্যতীত আর কেউ এ দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না। ঘোষণা দেয়া হবে, সওম পালনকারীরা কোথায়? তখন তারা দাঁড়াবে। তারা ব্যতীত আর কেউ এ দরজা দিয়ে প্রবেশ করবে না। তাদের প্রবেশের পরই দরজা বন্ধ করে দেয়া হবে। যাতে করে এ দরজাটি দিয়ে আর কেউ প্রবেশ না করে।

মুসলিম ১৩/৩, হাঃ ১১৫২ ইঃ ফাঃ ফাউন্ডেশনঃ ১৭ ৭২)

★ আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি মিথ্যা বলা ও সে অনুযায়ী আমল বর্জন করেনি, তার এ পানাহার পরিত্যাগ করায় আল্লাহর কোন প্রয়োজন নেই। ইঃ ফাঃ ১৭৭৯

মহান আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে, পবিত্র রমজান মাসের ফরয রোযাগুলো যথাযথভাবে আদায় করার তৌফিক দান করুন। আমীন

No comments