শবে বারাআত করনীয় ও বর্জনীয়!
শবে বারাআত করনীয় ও বর্জনীয়!
লেখকঃ আজিজুল হাকিম
শবে বারাআত কি?
শবে বারাআত অর্থঃ ফার্সিতে শব অর্থ, রাত্রি বা রজনী। আর বারাআত অর্থঃ মুক্তি সুতরাং শবে বারাআত মানে জাহান্নাম থেকে মুক্তির রজনী।
শাবান মাসের ১৪ই দিবাগত রাতকেই শবে বারাআত বলে।
শবে বারাআতের প্রমাণঃ
# হযরত আলী বিন আবু তালীব রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-যখন শাবান মাসের অর্ধেকের রজনী আসে তখন তোমরা রাতে নামায পড়, আর দিনের বেলা রোযা রাখ। নিশ্চয় আল্লাহ এ রাতে সূর্য ডুবার সাথে সাথে পৃথিবীর আসমানে এসে বলেন-কোন গোনাহ ক্ষমাপ্রার্থী আছে কি আমার কাছে? আমি তাকে ক্ষমা করে দিব। কোন রিজিকপ্রার্থী আছে কি? আমি তাকে রিজিক দিব। কোন বিপদগ্রস্থ মুক্তি পেতে চায় কি? আমি তাকে বিপদমুক্ত করে দিব। আছে কি এমন, আছে কি তেমন? এমন বলতে থাকেন ফযর পর্যন্ত।
সূনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-১৩৮৮, শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-৩৮২২,
# হযরত আয়শা রাঃ বলেন-এক রাতে রাসূল সাঃ কে না পেয়ে খুজতে বের হলাম। খুঁজতে খুঁজতে জান্নাতুল বাকীতে আমি তাঁকে দেখতে পেলাম। তিনি বললেন-কি ব্যাপার আয়শা? তোমার কি মনে হয় আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল তোমার উপর কোন অবিচার করবেন? আয়শা রাঃ বললেন- আমার ধারণা হয়েছিল আপনি অন্য কোন বিবির ঘরে গিয়েছেন। রাসূল সাঃ তখন বললেন-যখন শাবান মাসের ১৫ই রাত আসে অর্থাৎ যখন শবে বারাআত হয়, তখন আল্লাহ পাক এ রাতে প্রথম আসমানে নেমে আসেন। তারপর বনু কালব গোত্রের বকরীর পশমের চেয়ে বেশী সংখ্যক বান্দাদেরকে ক্ষমা করে দেন।
সুনানে তিরমিযী, হাদীস নং-৭৩৯, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-২৬০২৮, মুসনাদে আব্দ বিন হুমাইদ, হাদীস নং-১৫০৯
# হযরত মুয়াজ বিন জাবাল রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-অর্ধ শাবানের রাতে আল্লাহ তাআলা তাঁর সমস্ত মাখলুকের প্রতি মনযোগ আরোপ করেন এবং মুশরিক ও বিদ্বেষ ভাবাপন্ন ব্যক্তি ছাড়া সকলকে ক্ষমা করে দেন।
সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৫৬৬৫, মুসনাদুল বাজ্জার, হাদীস নং-২৭৫৪, মুসনাদে ইসহাক বিন রাহওয়াই, হাদীস নং-১৭০২, আল মুজামুল আওসাত, হাদীস নং-৬৭৭৬, আল মুজামুল কাবীর, হাদীস নং-২১৫, সুনানে ইবনে মাজা, হাদীস নং-১৩৯০, মুসনাদুশ শামীন, হাদীস নং-২০৩, মুসন্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-৩০৪৭৯, শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-৬২০৪
উক্ত রাতে করনীয় আমল হচ্ছেঃ
★ গোনাহ মাফের জন্য বেশী বেশী করে তওবা ইস্তেগফার করা।
★ কবর যিয়ারত করা।
★ অনির্দিষ্টভাবে নফল নামায আদায় করা।
★ দিনের বেলা রোযা রাখা।
উক্ত আমলগুলো নফল, কেউ ইচ্ছে করলে করতেও পারে আবার না ও করতে পারে। করলে সাওয়াব আছে না করলে গোনাহ নেই। তাই, কেউ করলে তাকে বাধা দেয়া যাবে না। আর কেউ না করলে তাকে তিরস্কার করা যাবে না।
উক্ত রাতে বর্জনীয় কাজ হচ্ছেঃ
★ হালুয়া রুটির আয়োজন না করা।
★ সকলে দল বেঁধে একত্রিত হয়ে মসজিদ বা অন্য কোথাও নামায আদায় না করা।
★ মিলাদ মাহফিল না করা।
★ মোমবাতি না জ্বালানো।
★ পটকাবাজী বা আতসবাজি না করা।
No comments